অডিওলজিস্ট হলেন একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ যিনি মানুষের শ্রবণশক্তি, কান এবং সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলির নির্ণয়, চিকিৎসা এবং ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তারা শ্রবণশক্তির ক্ষতি, ভারসাম্যের সমস্যা এবং কান সম্পর্কিত অন্যান্য অস্বাভাবিকতার জন্য দায়ী। অডিওলজিস্টরা শ্রবণযন্ত্র বা ককলিয়ার ইমপ্লান্টের মতো ডিভাইস ব্যবহারে সাহায্য করেন এবং রোগীদের শ্রবণশক্তি বাড়াতে এবং জীবনের মান উন্নত করতে কাজ করেন।
শ্রবণশক্তি পরীক্ষা:
একজন অডিওলজিস্ট রোগীর শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করে দেখে তাদের কানে কোনও সমস্যা বা শ্রবণশক্তির ক্ষতি হয়েছে কি না। এটি একাধিক পরীক্ষা এবং মূল্যায়নের মাধ্যমে করা হয়।
শ্রবণশক্তি ক্ষতির নির্ণয় এবং চিকিৎসা:
যদি রোগীর শ্রবণশক্তির ক্ষতি ঘটে থাকে, অডিওলজিস্ট সেই ক্ষতির ধরন এবং মাত্রা নির্ধারণ করেন এবং উপযুক্ত চিকিৎসার পরামর্শ দেন।
শ্রবণযন্ত্রের পরামর্শ ও ফিটিং:
অডিওলজিস্টরা রোগীদের জন্য সঠিক শ্রবণযন্ত্র বা ডিভাইস নির্বাচন করেন এবং সেগুলি ব্যবহার করার প্রশিক্ষণ দেন।
কানের ভারসাম্য সমস্যার সমাধান:
কান ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যাদের ভারসাম্যের সমস্যা (যেমন মাথা ঘোরা বা ভার্টিগো) রয়েছে, অডিওলজিস্ট তাদের চিকিৎসা করেন।
ককলিয়ার ইমপ্লান্টের সেবা:
গুরুতর শ্রবণশক্তি হ্রাসের ক্ষেত্রে অডিওলজিস্টরা ককলিয়ার ইমপ্লান্ট স্থাপন ও পরিচালনায় সহায়তা করেন।
শ্রবণশক্তি সংরক্ষণ:
উচ্চ শব্দের পরিবেশে কাজ করা ব্যক্তিদের জন্য কানের সুরক্ষা ব্যবস্থা, যেমন ইয়ারপ্লাগ, ব্যবহারের পরামর্শ প্রদান করেন।
শ্রবণশক্তি হ্রাস:
যদি আপনি বা আপনার পরিবারে কেউ শ্রবণশক্তি হ্রাসের লক্ষণ অনুভব করেন, তবে অডিওলজিস্টের কাছে যাওয়া উচিত।
কানে বাজা (টিনিটাস):
কানে বাজানোর অনুভূতি হলে (টিনিটাস), অডিওলজিস্ট চিকিৎসা দিয়ে সাহায্য করতে পারেন।
শিশুদের শ্রবণ সমস্যা:
শিশুরা যদি শ্রবণ বা কথা বলার ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হয়, তবে অডিওলজিস্ট এর সমাধান করতে পারেন।
ভারসাম্যের সমস্যা:
কান সম্পর্কিত ভারসাম্যের সমস্যা থাকলে (যেমন ভার্টিগো), অডিওলজিস্ট সেই সমস্যার সমাধানে কাজ করেন।
শ্রবণ ডিভাইস ব্যবহারের প্রয়োজন:
যদি শ্রবণশক্তি উন্নত করার জন্য ডিভাইস প্রয়োজন হয়, তবে সঠিক ডিভাইস বেছে নিতে এবং ব্যবহার করতে অডিওলজিস্ট সাহায্য করেন।
অডিওমেট্রি পরীক্ষা:
শ্রবণশক্তি পরিমাপের জন্য নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সি এবং তীব্রতার আওয়াজের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়।
টাইমপ্যানোমেট্রি:
মধ্যকানের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়, যা ইনফেকশন বা তরল উপস্থিতি নির্ণয় করতে সাহায্য করে।
বালেন্স পরীক্ষা (ENG বা VNG):
ভারসাম্যের সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য চোখ এবং কানের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়।
শিশুদের শ্রবণ পরীক্ষা:
বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুদের শ্রবণ এবং যোগাযোগের দক্ষতা নির্ণয় করা হয়।
জীবনের মান উন্নত করা:
শ্রবণ বা ভারসাম্যের সমস্যার সমাধান করে অডিওলজিস্ট রোগীদের জীবনযাত্রার মান বাড়িয়ে দেন।
রোগ প্রতিরোধ:
সঠিক সময়ে শ্রবণ সমস্যার চিকিৎসা শুরু করে ভবিষ্যতে বড় ধরনের ক্ষতি প্রতিরোধ করা যায়।
পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করা:
শ্রবণশক্তি সমস্যার সমাধান করে পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে রোগীর যোগাযোগ উন্নত করতে সাহায্য করেন।
অডিওলজিস্টরা কান এবং শ্রবণশক্তি সম্পর্কিত সমস্যার জন্য অপরিহার্য বিশেষজ্ঞ। শ্রবণশক্তি উন্নত করা এবং যোগাযোগের দক্ষতা পুনরুদ্ধারে তারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শ্রবণ বা ভারসাম্য সমস্যায় পড়লে সঠিক সময়ে একজন অডিওলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।